কোরবানীর ৪টি মাসআলা সম্পর্কে জ্ঞান থাকা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য খুবই জরুরি। আজ আমরা কোরবানীর ৪টি মাসআলা সম্মন্ধে আলোচনা করব।
প্রশ্ন-১ : কোরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কয়টি ও কি কি?
উত্তর: কোরবানী ওয়াজিব হওয়ার জন্য ৬ টি শর্ত রয়েছে। যথা-
১. কোরবানী দাতা মুসলমান হতে হবে।
২. কোরবানী দাতা স্বাধীন হতে হবে।
৩. কোরবানী দাতা মুকিম/স্থানীয় হতে হবে।
৪. কোরবানী দাতা নেসাব পরিমাণ মালের অধিকারী হতে হবে।
দ্রব্যগুণ সংক্রান্ত যাদু আর টোটকা বিদ্যা শিখতে ভিজিট করুন
মালে নেসাব এর ব্যাখ্যা : মালে নেসাব বা নেসাব পরিমাণ মাল হল- যে ব্যক্তির কাছে ১ বছর যাবত সাড়ে ৭ তুলা সোনা বা সাড়ে ৫২ তুলা রোপা বা সমপরিমাণ অর্থ থাকে (সকল প্রয়োজনীয়তা পূরণ করার পর) তাঁর উপর কোরবানী করা ওয়াজিব হবে।
মালে নেসাব এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা: কোনো ব্যক্তি নেসাব পরিমাণ মালের অধিকারী কি না তা মাপার মাপকাঠি তিনটি। যথা-
১. স্বর্ণের নেসার,
২. রৌপ্যের নেসাব ও
৩. নগদ অর্থের নেসাব।
যদি কারো কাছে ১ বছর যাবত কেবল সাড়ে ৫২ তুলা রোপা বা সমপরিমাণ অর্থ থাকে (সকল প্রয়োজনীয়তা পূরণ করার পর) তবে তাঁর উপর কোরবানি/যাকাত ফরজ হবে। এক্ষেত্রে সাড়ে ৭ তুলা সোনা হিসেব করার প্রয়োজন নেই। আর যদি কারো কাছে কেবল সাড়ে ৭ তুলা সোনা থাকে তাহলে তাঁর উপরও কোরবানি/যাকাত ওয়াজিব হবে। আবার যদি কোনো ব্যক্তির কাছে সাড়ে ৭ তুলা সোনার চেয়ে সামান্য পরিমাণ কম থাকে আর তাঁর কাছে কোনো নগদ অর্থ বা কিছু পরিমাণও রোপা না থাকে তাহলে তাঁর উপর কোরবানি/যাকাত ওয়াজিব হবে না। কিন্তু যদি কারো কাছে সামান্য পরিমাণ স্বর্ণ, সামান্য পরিমাণ রোপ্য এবং কিছু অর্থ/টাকা থাকে আর এই সবকিছু একত্রে হিসেব করলে নেসার পরিমাণ টাকা হয়ে যায় তাহলে সেই ব্যক্তির উপর কোরবানি/যাকাত ওয়াজিব হবে। অর্থাৎ সাড়ে ৫২ তুলার বর্তমান বাজার দর যত হবে নেসাব পরিমাণ অর্থ সেটাই হবে। (আল্লাহু আয়’লাম)
৫. কোরবানী দাতা স্বাবালক হতে হবে।
৬. কোরবানী দাতা আকিল/বুদ্ধিমান হতে হবে।
প্রশ্ন-২ : কোরবানীর সাথে আকীকা দেয়া যাবে কি না?
উত্তর: হ্যাঁ। কোরবানীর সাথে আকীকা দেয়া যাবে।
তবে আকীকা দেয়ার উত্তম পদ্ধতি হল সন্তান জন্ম নেয়ার ৭ম দিনে ছেলে সন্তান হলে ২টি ছাগল আর কন্যা সন্তান হলে ১টি ছাগল।
প্রশ্ন-৩ : মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানী দেয়া জায়েজ কি না?
উত্তর: মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানী দেয়ার ব্যাপারে উলামাদের মধ্যে কিছুটা মতপার্থক্য রয়েছে। কারো মতে জায়েজ আবার কারো মতে জায়েজ নেই। অধিকাংশ উলামাদের মতে মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানী দেয়া জায়েজ। তবে শর্ত হলো যে, জীবিত ব্যক্তির কোরবানীর সাথে মৃত ব্যক্তির নাম যুক্ত করা জায়েজ। কেবলমাত্র মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানী করা জায়েজ নেই। যদি কেউ এমনটি করে ফেলেন তাহলে ঐ কোরবানীর গোস্ত কোরবানী দাতা নিজে এবং পরিবারের কেউ খেতে পারবেন না। (আল্লাহু আ’লাম)
কোরবানির পশু যবেহ করার সঠিক নিয়ম জানতে ভিজিট করুর-
প্রশ্ন-৪ : কুরবানীর পশুর বয়সসীমা কত?
উত্তর: উট কমপক্ষে ৫ বছরের হতে হবে। গরু ও মহিষ কমপক্ষে ২ বছরের হতে হবে। আর ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে ১ বছরের হতে হবে। তবে ভেড়া ও দুম্বা যদি ১ বছরের কিছু কমও হয়, কিন্তু এমন হৃষ্টপুষ্ট হয় যে, দেখতে ১ বছরের মতো মনে হয় তাহলে তা দ্বারাও কুরবানী করা জায়েয। অবশ্য এক্ষেত্রে কমপক্ষে ৬ মাস বয়সের হতে হবে।
বিঃদ্রঃ ছাগলের বয়স ১ বছরের কম হলে কোনো অবস্থাতেই তা দ্বারা কুরবানী জায়েয হবে না।
অনলাইনে একদম ফ্রিতে ইনকার করার পদ্ধতি শিখতে ভিজিট করুন
মাওলানা মো: নজরুল ইসলাম সাহেব, ভাদেশ্বরী।
ইমেইল: nazruld@yahoo.com