in

শয়তান থেকে বাঁচার উপায় কোরআন হাদিসের আলোকে

শয়তানের অনিষ্ট থেকে বাঁচার উপায়

শয়তান থেকে বাঁচার উপায় তথা শয়তানের অনিষ্ট থেকে বাঁচার বিভিন্ন ধরনের উপায় বা আমল কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। মানব সৃষ্টির শুরু থেকেই শয়তান মানবের অনিষ্ট সাধনে সদা সচেষ্ট, তার প্রভাব এত বেশি যে, তার অনিষ্ট থেকে বাঁচা খুবই কষ্টকর। আল্লাহ তা’য়ালা ইরশাদ করেছেন- অবশ্যই শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু (সূরা ইউসুফ-৫)। শয়তান এমন এক শত্রু যাকে চোখে দেখা যায় না, ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না, পরাভূত করা যায় না।  আজকের আর্টিকেলে শয়তান থেকে বাঁচার উপায় পয়েন্ট আকারে তুলে ধরব।

এক. আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা

আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, ‘তোমরা যখন কোরআন পাঠ করো তখন বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করো (আউজুবিল্লাহ পাঠ করো)।’ (সুরা :নাহল, আয়াত- ৯৮)

অনুরূপভাবে কোরআন ও হাদিসে শয়তান থেকে বাঁচার উপায় হিসেবে কতিপয় ইসিম বা আয়াত পাঠের কথা উল্লেখ হয়েছে। যেমন- সুবহানাল্লাহ, আসতাগফিরুল্লাহ, লা হাওলা ওয়ালা কুউওয়াতা ইল্লা-বিল্লাহ, আল্লাহ আকবার, আয়াতুল কুরসি ইত্যাদি।
দুই. কাজে-কর্মে সতর্কতা অবলম্বন করা

মহানবী (সা) বলেন, ‘সূর্যাস্তের পর আধা ঘণ্টা পর্যন্ত ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রাখবে এবং বাচ্চাদের ঘরের বাইরে যেতে দেবে না। কারণ এ সময় শয়তান চলাচল করে। ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রাখলে শয়তান প্রবেশ করতে পারে না।’ (সহিহ বুখারি)

টিকে ইনকাম ডটকম এর ধামাকা অফার জানতে ভিজিট করুন
তিন. ভালো প্রবণতাকে প্রাধান্য দেয়া

রাসুলুল্লাহ (সা) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আদম সন্তানের উপর শয়তানের একটি প্রভাব আছে। অনুরূপ ফেরেশতারও একটি প্রভাব আছে। শয়তানের প্রভাব হলো, অকল্যাণের প্রতিশ্রুতি দেয়া এবং সত্যকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা। আর ফেরেশতার প্রভাব হলো, কল্যাণের প্রতিশ্রুতি দেয়া এবং সত্যের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করা। সুতরাং যে ব্যক্তি কল্যাণের অবস্থা উপলব্ধি করে সে যেন জেনে রাখে, এটি আল্লাহ তা’য়ালার পক্ষ থেকেই হয়েছে। কাজেই তার উচিত আল্লাহর প্রশংসা করা। আর যে ব্যক্তি অকল্যাণের অবস্থা উপলব্ধি করে, সে যেন অভিশপ্ত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে। অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সা) এ আয়াত পাঠ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় এবং অশ্লীলতার প্রতি নির্দেশ দেয়।’ (সুনানে তিরমিজি)
চার. নামাজে মনোযোগ সৃষ্টি করা

উসমান ইবনে আবুল আস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- আমি একবার রাসুল (সা)- এর কাছে আরজ করি, হে আল্লাহর রাসুল (সা)! শয়তান আমার ও আমার নামাজ-ক্বিরাতের মধ্যে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় এবং তাতে জটিলতা সৃষ্টি করে। রাসুলুল্লাহ (সা) তখন বললেন, ‘তুমি যখন তার উপস্থিতি অনুভব করবে তখন তার কুমন্ত্রণা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করবে এবং তোমার বাঁ দিকে তিনবার থুতু ফেলবে।’ (মুসলিম)

পাঁচ. তর্কে লিপ্ত না হওয়া

রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন- তোমাদের কারো নিকট শয়তান এসে বলে, এটা কে সৃষ্টি করেছেন? ওটা কে সৃষ্টি করেছেন? এমনকি সে এরূপ প্রশ্নও করে থাকে যে, তোমার প্রভুকে কে সৃষ্টি করেছেন? সুতরাং শয়তান যখন এ পর্যায়ে পৌঁছে যায় তখন ঐ ব্যক্তির উচিত হবে আল্লাহ তা’য়ালার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করা এবং (শয়তানের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হওয়া থেকে) বিরত থাকা (বুখারী ও মুসলিম)। তিনি আরো বলেন- তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যার সাথে জ্বিন এবং ফেরেশতাদের মধ্য হতে কাউকে সঙ্গী নিযুক্ত করা হয়নি। সাহাবীগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (স)! আপনার সাথেও কি এরূপ সঙ্গী নিযুক্ত আছে? রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, হ্যাঁ, আমার সাথেও আছে। তবে আল্লাহ তা’য়ালা তার ওপর আমাকে সাহায্য করেছেন, ফলে সে আমার অনুগত হয়ে গেছে। সে আমাকে কল্যাণকর কাজ ব্যতীত অন্য কোন কাজের পরামর্শ দেয় না (মুসলিম)। 
হযরত ওসমান ইবনে আবুল আস (রা) হতে বর্ণিত- আমি একদা রাসূল (স.) এর নিকট আরজ করলাম, হে আল্লাহ রাসূল (স.)!  শয়তান আমার মাঝে এবং আমার নামায ও কেরাতের মাঝে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় এবং তাতে জটিলতা সৃষ্টি করে। রাসূলুল্লাহ (স.) তখন বললেন, তুমি যখন তার উপস্থিতি অনুভব করবে। তখন তার কুমন্ত্রণা হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করবে এবং তোমার বামদিকে তিনবার থুথু ফেলবে। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূল (স.) এর কথা অনুুযায়ী আমি অনুরূপ করলাম। ফলে আল্লাহ তা’য়ালা আমার নিকট হতে শয়তানকে দূর করে দেন (মুসলিম)।

শয়তানের পরিচয়

শয়তান অর্থ বিতাড়িত, বিদূরিত, বঞ্চিত ইত্যাদি। শয়তান হক থেকে বিদূরিত এবং কল্যাণ থেকে বঞ্চিত বলে তাকে শয়তান বলা হয়। সে বিভিন্ন আকাশে বিভিন্ন নামে পরিচিত। প্রথম আকাশে আবেদ হিসেবে পরিচিত, দ্বিতীয় আকাশে যাহেদ (তাপস) হিসেবে পরিচিত, তৃতীয় আকাশে আরেফ (জ্ঞাত) হিসেবে পরিচিত, চতুর্থ আকাশে অলী হিসেবে পরিচিত, পঞ্চম আকাশে তক্বী (মুত্তাকী) হিসেবে পরিচিত, ষষ্ঠ আকাশে খাযেন (প্রহরী) হিসেবে পরিচিত, সপ্তম আকাশে আযাযীল হিসেবে পরিচিত আর পৃথিবীতে শয়তান ও জ্বিন হিসেবে পরিচিত। শয়তানের খাদ্য হলো হাড়, গোবর ইত্যাদির ঘ্রাণ এবং বিসমিল্লাহ বর্জিত খাদ্য। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন- যে খাদ্য ভক্ষণ কালে বিসমিল্লাহ পড়া হয় না, সেই খাদ্য ভক্ষণ করা শয়তান নিজের জন্য বৈধ মনে করে। তার পানীয় হলো মদ, শিকারের ফাঁদ হলো নারী, বার্তা বাহক হলো গণক, কিতাব হলো অশ্লীল কল্পিত গ্রন্থাবলী, কথা হলো মিথ্যা, মুয়াজ্জিন হলো বাঁশী ও বাদ্যযন্ত্র, উপাসনালায় হলো বাজার।

মহানবী (সা) বলেছেন- জ্বিন তিন ভাগে বিভক্ত। এক দল পাখা বিশিষ্ট, বাতাসে উড়ে বেড়ায়। আরেক দল সাপ ও কুকুর (উভয় প্রাণী আদিতে শয়তানের সহায়ক শক্তি ছিল), আরেক দল পৃথিবীতে বিচরণ করে। (হাকেম, হাদীস নং- ৩৭০২, আলবানী সহিহুল জামে- হাদীস নং- ৩১১৪)। 
হযরত ইবনে আব্বাস (রা) বলেন- ইবলিসের নাম ছিল আযাযীল। সে ছিল ফেরেশতাদের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানী। তার রয়েছে চারটি পাখা। হযরত ইবনে আব্বাস (রা) এর অপর বর্ণনায় রয়েছে- ইবলিস ছিল ফেরেশতাদের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তা’য়ালার নাফরমানী করার কারণে তাঁর ক্রোধে পরে শয়তান হয়ে যায়। হযরত কাতাদাহ (রা) থেকে বর্ণিত, শয়তান ফেরেশতাদের একটি শ্রেণী, এদেরকে জিন্নাহ বলা হত। 
হযরত সাঈদ ইবনে জুবাইর (রা) বলেন- জ্বিন ফেরেশতাদের বংশোদ্ভূত, একে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে, ইবলিস তাদের অন্তর্ভুক্ত। আবু যায়েদ, হাসান, কাতাদাহ প্রমুখ বলেন- ইবলিস জ্বিন জাতির আদি পিতা, যেমন আদম (আ) মানব জাতির আদি পিতা, সে ফেরেশতা নয়। ইবনে আব্বাস (রা) এর আরেক বর্ণনায় রয়েছে- তার নাম হারেস। জ্বিন জাতি পৃথিবীর বাসিন্দা ছিল। ফেরেশতাগণ তাদের সকলকে হত্যা করে ইবলিসকে বন্দি করেন। তখন সে ছিল ছোট। ফেরেশতাদের সাথে সে আল্লাহ তা’য়ালার ইবাদত করতে থাকে। আশি হাজার বছর সে আল্লাহ তা’য়ালার ইবাদত করে। তাকে নেতৃত্ব, জান্নাতের কর্তৃত্ব দেয়া হয়েছিল। এতে সে নিজেকে ফেরেশতাদের উপর মর্যাদাবান মনে করে আমি আদমের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বলেছে। হযরত ইবনে আব্বাস (রা) এর আরেক বর্ণনায় রয়েছে- ইবলিস ফেরেশতাদের বংশোদ্ভূত। একে সৃষ্টি করা হয়েছে বিষধর অগ্নি থেকে, আর ফেরেশতাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে নূর থেকে। গ্রীক ভাষায় তার নাম আযাযীল, আর আরবি ভাষায় হারেস। সে ছিল জান্নাতের দ্বার রক্ষক এবং দুনিয়ার আকাশের ফেরেশতাদের নেতা। দুনিয়ার আকাশ ও জমিনের কর্তৃত্ব ছিল তার হাতে। ফেরেশতাদের মধ্যে তার ছিল সর্বাধিক উদ্ভাবনী ক্ষমতা এবং সে ছিল সর্বাধিক জ্ঞানী। আকাশ ও জমিনের মাঝে সে কুমন্ত্রণা দিত। (কুরতুবী ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা নং- ২৩৬) 
শয়তানের প্রথম অপরাধ

শয়তানের প্রথম অপরাধ হলো- হযরত আদম (আ) কে সিজদা না করা। হযরত আদম (আ) কে সৃষ্টির সূচনা লগ্ন থেকেই সে হিংসা করে আসছে। আল্লাহ তা’য়ালা হযরত আদম (আ) এর ষাট হাত দেহ তৈরি করে যখন জান্নাতে রেখে দেন, তখন শয়তান হযরত আদম (আ) এর মুখ দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে পায়ু পথ দিয়ে বেরিয়ে এসে ফেরেশতাদেরকে বলে ভয় করো না, ভেতরে কিছুই নেই। যদি আমার উপর তাকে কর্তৃত্ব দেয়া হয়, তবে অবশ্যই আমি তাকে ধ্বংস করবো। (কুরতুবী ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা নং- ২২৬)। মানুষ, শয়তান ও সাপ আদি থেকে পারস্পরিক শত্রু, তাই শয়তান থেকে সতর্ক থাকার এবং সাপ মেরে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তা’য়ালা সাপকে বলেন- তুমি আদম সন্তানের শত্রু, তারা তোমার শত্রু, তাদের কেউ তোমার সাক্ষাত পেলে তোমার মাথা চুর্ণ করবে। রাসূল (সা) বলেন-   আল্লাহ তা’য়ালা সাপ মেরে ফেলার বীরত্বকে পছন্দ করেন। অপর হাদীসে রয়েছে- যে ব্যক্তি (বিষধর) সাপকে হত্যা করল সে যেন একজন কাফিরকে হত্যা করল (তিবরানী- ২৪/৩০৮)। 
শয়তানের প্রার্থনা

আল্লাহ যখন শয়তানকে জান্নাত থেকে বের করে দেন তখন সে চারটি বিষয়ের আবেদন করে। আল্লাহপাক তার এই ৪টি আবেদনই মঞ্জুর করেন। আর তা হলো- 

১. ইবলিস বলল, আমাকে কিয়ামত পর্যন্ত জীবন লাভের সুযোগ দিন। আল্লাহ তার এ প্রার্থনা কবুল করেন। আল্লাহর বাণী, ‘ইবলিস বলল, আমাকে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত সুযোগ দিন, আল্লাহ তাআলা বললেন, তুমি সুযোগপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৫)
২. ইবলিস বলল, আমার জীবিকার ব্যবস্থা করতে হবে। আল্লাহর পক্ষ হতে এই আবেদনও কবুল করা হয়।
৩. ইবলিস বলল, আমাকে মানুষের দৃষ্টিশক্তির অন্তরাল হওয়ার সুযোগ দিতে হবে। এই আবেদনটিও কবুল করা হয়।
৪. ইবলিস বলল, আমি যেন মানবদেহের শিরা-উপশিরায় চলাচল করতে পারি। এ দোয়াও কবুল করা হয়।
মহানবী (সা) বলেন, ‘অবশ্যই শয়তান আদম সন্তানের শিরা-উপশিরায় বিচরণ করে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১২৮৮; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২১৭৪) 
জ্বিনদের ইসলাম গ্রহণ 

জ্বিনদের মধ্যে মুসলমান জ্বিনও রয়েছে। তারা মানুষের কোন ক্ষতি করে না। হাদীস শরীফে রয়েছে একদা ‘নাখলা’ নামক স্থানে একদল জ্বিন রাসূল (সা) এর নিকট কুরআন শুনে ইসলাম গ্রহণ করে এবং স্বজাতির কাছে গিয়ে বলে- আমরা এক বিস্ময়কর কুরআন শুনেছি (সূরা জিন- ১)।

হাদিস শরীফে এসেছে। রাসূল (সা) বলেন- “আতানি দা-য়ীআল জ্বিন্নী, ফা জাহাবতু ইলাইহি, ওয়া ক্বারাআয়তুল ক্কোরআনা।”

অর্থ: আমার নিকট একদল জ্বিন আসল অত:পর তারা আমাকে দাওয়াত দিল এবং আমি তাদের কাছে গিয়ে ক্বোরআন তিলাওয়াত করলাম।

বিদায়ের সময় তারা রাসূল (সা) এর কাছে তাদের রিযিক বৃদ্ধির আবেদন করল। তখন আল্লাহর নবী তাদেরকে বললেন- “লাকুম কুল্লি আদমিন জুকিরাছমুল্লাহি আলাইহি” অর্থাৎ তোমাদের জন্য এই সকল পশুর খাবারগুলোকে হালাল করে দেয়া হয়েছে, যে সকল পশু আল্লাহর নামে জবেহকৃত। এই হাদিস থেকে বোঝা যায় আল্লাহর নামে জবেহকৃত সকল রান্না করা পশুর হাড়ে মুসলিম জ্বিনদের জন্য মজুদকৃত মাংস থাকে। তারা এই ফেলে দেয়া হাড়গুলোতে সেই গোস্ত পায় যা জবেহ করার সময় মজুদ থাকে। আল্লাহু আকবার।

মুসলিম শরীফে রয়েছে- মদীনায় কতিপয় জ্বিন মুসলমান হয়েছে (মুসলিম, হাদীস নং- ২২৩৬)। আল্লাহর ঘরের উত্তর পার্শ্বে রয়েছে জ্বিন মসজিদ।
শয়তানের চ্যালেঞ্জ

শয়তান আল্লাহ তা’য়ালাকে বলল, আপনি আমাকে যেমন উদভ্রান্ত করেছেন, আমিও অবশ্য তাদের জন্যে আপনার সকল পথে বসে থাকবো। অত:পর তাদের কাছে আসব তাদের সামনের দিক থেকে, পেছন দিক থেকে, ডান দিক থেকে এবং বাম দিক থেকে। আপনি তাদের অধিকাংশকে কৃতজ্ঞ পাবেন না (সূরা আ’রাফ- ১৬-১৭)। 
শয়তান মানুষকে পথ ভ্রষ্ট করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। আল্লাহর বাণী- সে (ইবলিস) বলল, হে আমার পালনকর্তা, আপনি যেমন আমাকে পথ ভ্রষ্ট করেছেন, আমিও তাদের সবাইকে পৃথিবীতে নানা সৌন্দর্য্যে আকৃষ্ট করব এবং তাদের সবাইকে পথভ্রষ্ট করে দেব। আপনার মনোনীত বান্দাগণ ব্যতীত (তাদের কোন ক্ষতি আমি করতে পারবো না) (সূরা হিজর- ৩৯-৪০)।

আল্লাহ তা’য়ালা ইবলিসকে বলেন- অবশ্যই যারা আমার বান্দাহ, তাদের উপর তোমার কোন ক্ষমতা নেই, কিন্তু পথভ্রষ্টদের মধ্য থেকে যারা তোমার পথে চলে। তাদের সবার নির্ধারিত স্থান হচ্ছে জাহান্নাম (সূরা হিজর- ৪৩-৪৪)। 
বিচার দিবসে ইবলিসের বক্তব্য

মানুষের ন্যায় ইবলিসও হাশরের ময়দানে উঠবে। ইবলিস তখন নিজেকে পরিচ্ছন্ন ও পাপমুক্ত রাখার চেষ্টা করবে। আল্লাহ তা’য়ালার বাণী যখন সব কাজের ফয়সালা হয়ে যাবে, তখন শয়তান বলবে, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে সত্য ওয়াদা দিয়েছিলেন এবং আমি তোমাদের সাথে ওয়াদা করেছি। অত:পর তা ভঙ্গ করেছি। তোমাদের উপর তো আমার কোন ক্ষমতা ছিল না। শুধু এতটুকু যে, আমি তোমাদেরকে ডেকেছি, অত:পর তোমরা (আমার ডাকে সাড়া দিয়ে) আমার কথা মেনে নিয়েছ। এখন তোমরা আমাকে ভৎর্সনা করো না, বরং নিজেদেরকেই ভর্ৎসনা কর। (সূরা ইবরাহীম- ২২)। ইবলিস বংশ বিস্তার করে এবং যে কোন আকৃতি ধারণ করতে পারে। পৃথিবীর সর্বত্র তার বিচরণ ক্ষেত্র।  শয়তান থেকে বাঁচার উপায় পোষ্টটি শেয়ার করে মোমিনদের সহায়তা করবেন।

আল্লাহপাক আমাদেরকে শয়তানের অনিষ্ট থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দিন, আমীন!!!

দ্রব্যগুণের যাদু আর আজব ব্যবহার বিদ্যা শিখতে ভিজিট করুন

What do you think?

0 points
Upvote Downvote

Leave a Reply

Loading…

0

Comments

0 comments

খতমে খাজেগানের ফজিলত ও বিশেষ উপকারিতা

খতমে খাজেগানের ফজিলত ও বিশেষ উপকারিতা

ইংরেজি ভাষার বিস্ময়কর তথ্য জানুন

ইংরেজি ভাষার বিস্ময়কর তথ্য জেনে নিন