কোমর ব্যথার কারণ ও তার প্রতিকার আমরা অনেকেই জানতে চাই। তাই আজকে পাঠকদের জন্য রইল কোমর ব্যথার কারণ ও তার প্রতিকার।
এমন মানুষ হয়ত পৃথিবীতে পাবেন না যিনি তার জীবনে একবারও কোমরে ব্যথা অনুভব করেননি। মেরুদন্ডের নিচের হাড়ের মধ্যবর্তী তরুণাস্থি বা ডিস্কের বার্ধক্যজনিত পরিবর্তনের ফলে এ ব্যথার সুত্রপাত হয়। তরুণাস্থির এই পরিবর্তনের সাথে সাথে মেরুদন্ডের নিচের দিকে সংবেদনশীলতার পরিবর্তন হয়। সাধারণত এ পরিবর্তন ৩০ বছর বয়স থেকে শুরু হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ রোগের কোনো উপসর্গ থাকে না। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে রোগের উপসর্গও বাড়তে থাকে
কোমর ব্যথার কারণ
কোমরের ব্যথার নানাবিধ কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো-
১. হাড়ের রোগ
২. মেরুদন্ডের কশেরুকার মাঝখানের ডিস্কের ডিজেনারেশন বা ক্ষয়প্রাপ্তি
৩. ত্রুটিপুর্ণ দৈহিক গঠন
৪. যে কোনভাবে আঘাত বা ঝাঁকুনি প্রাপ্তি
৫. অপ্রত্যাশিত ওজন বৃদ্ধি
৬. অধিক সময় ধরে একনাগাড়ে বসে থাকা বা দাড়িয়ে থাকা
৭. বেশি বেশি যান বাহনে ভ্রমন করা
৮. নরমাল বিছানায় শোয়া
৯. মোভিং (রিভল্ভিং) চেয়ারে বসা
১০. উঁচু হিলের জুতা পরা
১১. ঠান্ডা ও স্যাতস্যাতে জায়গায় বাস করা
১২. অধিক সময় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে অবস্থান করা
১৩. অপরিমিত রতিক্রিয়া
১৪. বিশৃঙ্খল জীবন যাপন করা
১৫. কোন ভারি জিনিস হাতে ঝুলিয়ে বহন বা উত্তোলন করা ।
কোমর ব্যথার লক্ষণসমূহ
১. দাঁড়ানো বা বসা অবস্থায় কোমরে ব্যথা অনুভূত হওয়া
২. কোমর থেকে উৎপন্ন ব্যথা পায়ে ছড়িয়ে পড়া
৩. নিতম্ব ও পায়ের মাংসপেশীতে ব্যথা
৪. পায়ের বিভিন্ন অংশে ঝিনঝিন, শিন শিন করা
৫. পায়ের বোধশক্তি কমে আসা, পর্যায়ক্রমে পায়ের অসারতা
৬. ধীরে ধীরে পা দুর্বল হয়ে পায়ের কার্যক্ষমতা লোপ পাওয়া
৭. চুড়ান্ত পর্যায়ে পঙ্গুত্ববরণ করা
কোমর ব্যথার প্রতিকার
১. পরিকল্পিত ও পরিমিত মৃদু ব্যায়াম করা
২. ওজন নিয়ন্ত্রণে এবং প্রয়োজনে ওজন হ্রাস করা
৩. ব্যথার স্থানে কুশুম গরম পানি ঢালা
৪. মেরুদন্ড সোজা করে বসার অভ্যাস করা
৫. কোনকিছু মাটি থেকে তুলতে কোমর বাঁকা না করে হাঁটু ভাঁজ করে তোলা
৬. অবসর সময়ে বিছানায় আরাম করে শুয়ে হট ওয়াটার ব্যাগ দিয়ে ব্যথার স্থানে স্যাক নেয়া
৭. একনাগাড়ে অনেক্ষন হাঁটাহাটিঁ না করা
৮. কর্মস্থলে একনাগাড়ে বসে না থেকে কিছুক্ষন পরপর একটু হালকা হাটাহাটি বা নড়াচড়া করা
৯. শক্ত বিছানায় ঘুমানোর অভ্যাস করা
১০. অলিভ অয়েল কুশুম গরম করে ব্যথার স্থানে মৃদুভাবে মালিশ করা
১১. সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করা
১২. কোমরে বেল্ট বেঁধে চলা ফেরা করা, যাতে
১৩. কোনভাবেই কোমরে ঝাঁকুনি না লাগে
১৪. ভরা বালতি বা ভারী বাজারের ব্যাগ হাতে ঝুলিয়ে বহন না করা।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার উপকারিতা নিয়ে আলোচনা ও বিভিন্ন ঔষধের নাম শিখতে ভিজিট করুন
ব্যথার রোগীর প্রতিদিনের খাবার
ব্যথা হ্রাস-বৃদ্ধিতে খাবারের ভূমিকা অনেক । তাই আমাদের নিত্যকার খাবারের মধ্যে সবুজ শাক-সব্জি ও ফলমূল অন্যতম । এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ, সি, ডি ও সাইট্রাসসমৃদ্ধ উপাদান । এগুলো অস্থিকে মজবুত ও অস্থির ক্ষয় রোধে সহায়তা করে । তাই খাবারের ব্যাপারে আমাদের বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে এবং বেশি সবুজ শাক-সব্জি ও ফলমূল খেতে হবে । তাছাড়া প্রতিদিনের খাবার হবে সহজ পাচ্য ও কম মসলাযুক্ত ।
কোমর ব্যথার চিকিৎসা
কোমর ব্যথায় সুনির্বাচিত আয়ুর্বেদিক ঔষধ বেশ ফলপ্রসু যা বহুল পরীক্ষিত । লক্ষণসমষ্টি নির্ণয় করে রোগের হ্রাস-বৃদ্ধি ও ধাতুগত দিক বিবেচনায় রেখে নিম্নলিখিত ঔষুধগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে-
১. ট্যাবলেট আরগোনিপ,
২. ক্যাপসুল ম্যাক্সবোন-ডি,
৩. ক্যাপসুল ম্যাক্সজয়েন।
৩০টি আজব দ্রব্যগুণের টোটকা যাদু শিখতে ভিজিট করুন
সূত্র: ইন্টারনেট থেকে
বিশেষ দ্রষ্টব্য: যে কোনো রোগের সঠিক চিকিৎসা পেতে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ ও নির্দেশনা আবশ্যক।