ক্যালসিয়াম আমাদের দেহের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি দেহের হাড় ও দাঁতের প্রধান উপাদান। আমাদের সকলের উচিত ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার সম্পর্কে জানা। কেননা ক্যালসিয়ামের অভাবে শরীরে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। মাংসপেশী সংকুচিত হওয়া, হাড়ে ভঙ্গুরতা, খাদ্য গ্রহণে অরুচি, হার্টে সমস্যার সৃষ্টি হওয়া, উচ্চ রক্তচাপ, কোলন ক্যান্সার ইত্যাদি আরও নানা রকম সমস্যা বাসা বাঁধে শরীরে। ক্যালসিয়াম শরীরে শক্তি যোগায় এবং এটি হাড় গঠনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে। পরিমাণমত এটি না পেলে শরীর দুর্বল হয়ে হাড়ে ভঙ্গুরতার মত মারাত্মক রোগের সৃষ্টি হয়। প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় তাই ক্যালসিয়াম চাহিদা পূরণ করে এমন খাদ্য অবশ্যই রাখতে হবে।
মানব দেহের কাঠামো তৈরি হয় হাড়ের মাধ্যমে। কঙ্কাল আমাদের দেহকে সঠিক আকারে এবং সঠিকভাবে চলাচলে সহায়তা করে থাকে। কাজেই হাড়ের যত্ন নিতে আমরা অবশ্যই কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া উচিত। হাড়ের অনেক রোগ রয়েছে। এই রোগগুলোর মাঝে অস্টিওপোরোসিস বর্তমানে সব থেকে বেশি নজরে পড়ে। এই রোগটির কারণে হাড়ের মজবুত গঠন ক্ষয়ে যেতে থাকে। কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো হাড় ক্ষয়ের জন্য বিশেষভাবে দায়ী। কিন্তু আমরা কেউ জেনে, কেউ না জেনে এই সকল খাবার গ্রহন করে চলেছি প্রতিদিন। আজকের আর্টিকেলে থাকছে হাড় মজবুত করে এমন কিছু ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার এর তালিকা-
দুধ
প্রতিদিনের ডায়েট চার্টের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য হলো দুধ। এটি ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদানে পরিপূর্ণ, যা আমাদের সুস্থ হাড় ও দাঁত গঠনে অপরিহার্য। ছোটবেলা থেকে সারাজীবন নিয়মত দুধ পানের অভ্যাস হাড়কে করবে অধিক শক্তিশালী, এতে ওস্টেয়োপোরোসিস/হাড় ভঙ্গুর হবার ভয় অনেকাংশে কমে যাবে। জ্ঞানী মনীষীদের মূল্যবান উক্তিসমূহ পড়তে ভিজিট করুন
পনির
পনিরও একটি উচ্চ ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য। পনিরের ক্যালসিয়াম হাড়ের ঘনত্ব ঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং ওস্টিয়োপোরোসিস থেকে রক্ষা করে। সঠিক পরিমাণে পনির গ্রহণ করলে এটি প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস সরবরাহ করে। তাই এসিড দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ রোগীর চিকিৎসায় এটি খুবই উপকারী।
সয়াবিন
বিভিন্ন রকম সয়া খাদ্যসমূহ যেমন, সয়া দুধ, সয়া আটা, টোফু ইত্যাদি যা ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, প্রোটিন, ফাইবার ইত্যাদি আরো বিভিন্ন রকম সুস্বাস্থ্যের জন্য দরকারি উপাদানে পরিপূর্ণ। সয়াতে ক্যালসিয়ামের উপস্থিতি প্রায় দুধের সমান। এতে রয়েছে ফাইটোএস্ট্রোজেন যা হাড়কে শক্তিশালীকরণে অনেক বেশি সাহায্য করে।
দই
ক্যালসিয়ামের উৎস হিসেবে এটিও অন্যতম একটি খাবার। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন। ৮ আউন্স দইয়ে থাকে ৪৪০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম।
ঢেঁড়স
ঢেঁড়স একটি গ্রীষ্মকালীন সবজি, এতে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাসিয়াম, ভাইটামিন বি, এ, সি।
শালগম
শালগম ক্যালসিয়াম ও পটাসিয়ামের উত্তম একটি উৎস। এটি হাড়ের নমনীয়তা, অস্টেয়োপরোসিস, ফ্রাকচার ইত্যাদি রোধ করতে সাহায্য করে এবং পেশীতে শক্তি যোগায় ও কর্মদক্ষতা বাড়ায়। এক কাপ শালগমে থাকে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে যা একজন পূর্ণবয়স্ক লোকের এক-পঞ্চমাংশ ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করে।
তিল
তিল একটি খনিজ পদার্থের অন্যতম উৎস। এতে আছে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, সেলেনিয়াম ও জিঙ্ক। এটি হরমোন উৎপাদন ও লোহিত রক্ত কনিকা উৎপাদনে সাহায্য করে। শালগম ও তিল দুটিই মজবুত দাঁত গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
বাদাম
প্রায় সব ধরনের বাদামে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, ভাইটামিন, পটাসিয়াম, আয়রন ও খনিজ পদার্থ। এটি দেহের জন্য অতি উপকারি যা শক্ত হাড় ও দাঁত গঠনে সাহায্য করে।
কমলা
কমলা একটি সাইট্রাস ফল যাতে আছে যথেষ্ট পরিমাণে পটাসিয়াম ও ক্যালসিয়াম।
সতর্কতা
অতিরিক্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম গ্রহণ দেহের জন্য ক্ষতিকর। এর ফলে নানা রকম রোগ যেমনঃ হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, কিডনিতে পাথর ইত্যাদি মারাত্মক রোগের সৃষ্টি হতে পারে। তাই আমাদের পরিমাণ মত খাদ্য গ্রহণে সজাগ থাকতে হবে আর সবর্দা ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে চলতে হবে।
উৎস: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহিত ও পরিমার্জিত
পেটে গ্যাসের সমস্যা চিরতরে বিদায় জানাতে ঘরোয়া টোটকা শিখতে ভিজিট করুন