ঋণ মুক্তির আমল সম্পর্কে আজকের আলোচনা। আমালিয়াত ১ম ভন্ড, ৪র্থ অধ্যায়, ৩য় পর্বে ঋণ মুক্তির আমল নিয়েই আলোকপাত করা হয়েছে।
লেখক: হযরত মাওলানা ক্বারী মো: নজরুল ইসলাম সাহেব, ভাদেশ্বরী। (এমএম, এমএ)
বিশেষ দ্রষ্টব্য: সময়ের স্বল্পতাহেতু সকল আয়াত বা বাক্যের হরকত দেয়া সম্ভব হয়নি।
ইনশাহ আল্লাহ ধীরে ধীরে প্রতিটি আয়াত বা বাক্যের হরকত সংযোজন করা হবে তথা যের, যবর, পেশ সংযোজন করা হবে। তাই আপডেট পেতে সাথে থাকুন।
চতুর্থ অধ্যায়, ৩য় পর্ব শুরু
পাঁচ: প্রত্যেক নামাজের পর নিচের দোয়া ৩ বার পাঠ করলে আল্লাহর হুকুমে ঋণ আদায়ের পথ বের হয়ে থাকে।
اللٰهمَ يا غنی يا حميد يا مبدئ يا معيد يا رحيم يا كريم اكفنی بحلالك عن حرامك واغننی بفضلك عمن سواك٠
উচ্চারণ- আল্লাহুম্মা ইয়া গানিয়্যু ইয়া হামীদু ইয়া মুবদিয়্যু ইয়া মুয়িদু ইয়া রাহীমু ইয়া কারীমুকফিনী বিহালালিকা আন হারামিকা ওয়াগনিনী বিফাদ্বলিকা আম্মান সিওয়াক।
ছয়: ঋণ মুক্তির জন্য নফল নামাজ
এক বেদুঈন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর খেদমতে ঋণ মুক্তির আমল জানার আরয করলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, তুমি প্রতিদিন ফরজ ও সুন্নাত নামাজ আদায় করা ছাড়াও ২ রাকাত করে ৪ রাকাত নফল নামাজ নিচের নিয়মে আদায় করবে। প্রথম রাকাতে সূরা ফাতেহার পর সূরা ক্বদর ১০ বার, সূরা ইখলাছ ১ বার। দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতেহার পর সূরা ইযাযুল জিলাত ১০ বার পাঠ করে যথারীতি সালাম ফিরানোর পর নিচের দোয়া পাঠ করবে।
الحمد لله الذی خلق الخلق ولم يخلقهم بجنب منفعته لا يزيد ملكه طاعة المطيع ويصد ويستطيع ويطلع ويعتدل ويختص ولا اله الا اللٰه واللٰه اكبر٠ عدد علمه ومنتهی علمه وما فی علمه٠
উচ্চারণ- আলহামদু লিল্লাহিল্লাযি খালাকাল খালকা ওয়া লাম ইয়াখলুক হুম বি বিঝামবিম মুনফাআ‘তিহি লা ইয়াযিদু মুলকিহি ত্বাআতুল মুত্বিই ওয়া ইয়াসুদ্দু ওয়া ইয়াসতাত্বিউ ওয়া ইয়াত্তালিউ ওয়া ইয়াতাদিলু ওয়া ইখাখতাজচ্ছু ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আদাদা ইলমিহি ওয়া মুনতাহা ইলমিহি ওয়া মা ফি ইলমিহি।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার উপকারিতা নিয়ে আলোচনা ও বিভিন্ন ঔষধের নাম শিখতে ভিজিট করুন
তারপর তৃতীয় রাকাতে সূরা ফাতেহার পর সূরা ওয়াল আদিয়াত ১০ বার ও সূরা ইখলাছ, সূরা ফালাক, সূরা নাছ ১০ বার করে পাঠ করবেন। এবং চতুর্থ রাকাতে সূরা ফাতেহার পর সূরা কাফিরূন ১০ বার পাঠ করে সালাম ফিরানোর পর নিচের দোয়া পড়বে।
سبحان ربك رب العزة عما يصفون وسلام علی المرسلين ۰ والحمد لله رب العالمين٠ وله الكبرياء فى السموٰت والارض ٠ وهو العزيز الحكيم٠
উচ্চারণ- সুবহানা রাব্বিকা রাব্বিল ইজ্জাতি আম্মা ইয়াসিফুন। ওয়া সালামুন আ‘লাল মুরসালীন, ওয়াল হামদু লিল্লাহ রাব্বিল আ‘লামীন। ওয়া লাহুল কিবরিয়াউ ফিস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ওয়া হুয়াল আযীযুল হাকীম।
অতঃপর আল্লাহ্পাকের দরবারে দোয়া করবে।
সাত: কোরআনের আযাত তিলাওয়াতের মাধ্যমে ঋণ মুক্তি
কোনো ব্যক্তি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়লে সূরা ইউনুসের আয়াত নং ৩১ খুব বেশি বেশি করে তিলাওয়াত করলে গায়েব থেকে তাঁর ঋণ পরিশোধের হবে এবং সে ঋণগ্রস্ত থাকবে না। আয়াটি হলো-
قل من يرزقكم من السماء والارض امن يملك السمع والابصار ومن يخرج الحی من الميت ويخرج الميت من الحی ومن يدبر الامر٠ فسيقون اللٰه ٠ فقل افلا تتقون٠
আট: প্রত্যেহ ফরজ নামাজ আদায় করার পর সূরা আনআম এর ৫৯ নং আয়াত ১০০ বার তিলাওয়াত করলে ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা হয় এবং রুজি-রোজগার বৃদ্ধি পায়। আয়াতটি হলো-
وعنده مفاتع الغيب لا يعلمها الا هو٠ ويعلم مافی البر والبحر٠ وما تسقط من ورقة الا يعلمها ولا حبة فی ظلمٰت الارض ولا رطب ولا يأبس الا فی كتب مبين٠
ঋণ হতে আশ্রয় প্রার্থনা এবং ঋণ পরিশোধের দুআ
নবী (সাঃ) ঋণ হতে আল্লাহর নিকট বেশি বেশি আশ্রয় প্রার্থনা করতেন, যা দেখে এক ব্যক্তি তাঁকে জিজ্ঞেস করেন-
হে আল্লাহর রাসূল! আপনি ঋণ থেকে খুব বেশি বেশি আশ্রয় প্রার্থনা করেন?
নবী (সাঃ) বলেন-
إن الرجل إذا غرم حدّث فكذب و وعد فأخلف – رواه البخاري
অর্থ- মানুষ ঋণী হলে, যখন কথা বলে, মিথ্যা বলে এবং অঙ্গীকার করলে অঙ্গীকার ভঙ্গ করে। [বুখারী, অধ্যায়ঃ ইস্তিকরায, নং ২৩৯৭]
তাই রাসূল (সাঃ) আরো বলতেন-
أللّهمَّ! إنّي أعوذُ بِكَ مِنَ الكَسَلِ والهَرَمِ والمأثَمِ والمَغْرَمِ – رواه مسلم
উচ্চারণ- আল্লাহুম্মা! ইন্নী আউযুবিকা মিনাল্ কাসালি, ওয়াল্ হারামি, ওয়াল্ মা’ছামি, ওয়াল্ মাগ্রাম॥
অনুবাদঃ হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় কামনা করছি অলসতা, অধিক বার্ধক্য, গুনাহ এবং ঋণ হতে। [মুসলিম, অধ্যায়ঃ যিকর ও দুআ, নং৬৮৭১]
তিনি (সাঃ) আরো বলতেন-
اللهم! إني أعوذ بك من الهم والحزن، والكسل، والبخل، والجبن، و ضلَع الدين، وغلبة الرجال – رواه النسائي
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিনাল্ হাম্মি ওয়াল্ হাযনি, ওয়াল্ কাসলি, ওয়াল্ বুখ্লি, ওয়াল্ দ্বুবনি, ওয়া দ্বালায়া’দ্দাইনি, ওয়া গালাবাতির রিজাল।
অর্থ- ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি, চিন্তা-ভাবনা, অপারগতা, অলসতা, কৃপণতা এবং কাপুরুষতা থেকে। অধিক ঋণ থেকে এবং দুষ্ট লোকের প্রাধান্য থেকে। [নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ইস্তিআযাহ, নং- ৫৪৭৮]
(৩য় পর্ব সমাপ্ত)
৩০টি আজব দ্রব্যগুণের টোটকা যাদু শিখতে ভিজিট করুন
যোগাযোগ: ০১৭১৬-৩৮৬৯৫৮, nazruld@yahoo.com